এ
সময় অফিস কিংবা বাসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনেকে অনেক ধরনের প্রযুক্তির
সাহায্য নিচ্ছেন। বাজারে এখন নিরাপত্তার অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি। এ রকম
কিছু আইটি প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে এ আয়োজন।
চুরি-ডাকাতি বা অন্য যে কোনো ঘটনার পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে এখন সিসি ক্যামেরা জরুরি হয়ে পড়ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা অনেকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বা সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার দিকে জোর দিচ্ছেন। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিসি ক্যামেরা বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে এভিটেক, ডাইয়ো, ক্যাম্পো, হিকভিশন, জিন ও ইয়োমাট ব্র্যান্ডের সিসি ক্যামেরা বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এগুলো চীন, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও আমেরিকা থেকে আমদানি করা হচ্ছে। মান ও প্রকারভেদে প্রতিটি সিসি ক্যামেরা ১,০০০-১৫,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আউটডোর বুলেট ক্যামেরার (স্পিড ডোম) একেকটির দাম ৪৮ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও সংযোগের জন্য বক্সের দাম পড়ছে সর্বনিু ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা। ৮টি ক্যামেরা সংযোগের জন্য খরচ করতে হবে ৫ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা। ১৬টি ক্যামেরা সংযোগের জন্য সর্বনিু খরচ হবে ৮,৫০০ থেকে ১৬ হাজার টাকা। আর ৩২ ক্যামেরা সংযোগের জন্য বক্সের দাম পড়বে ৮,০০০-৩৫,০০০ টাকা।
সিসি ক্যামেরা স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠান জিরো সার্কেল লিমিটেডের কর্ণধর বিপ্লব হাসান বলেন, বর্তমানে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রযুক্তির চাহিদা বেড়েছে; সেই সঙ্গে কাজের চাপও অনেক বেশি। আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজের অর্ডার পাচ্ছি।
ডোর মেটাল ডিটেক্টর
সাধারণত বড় শপিংমল বা জনগুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে প্রবেশের আগে যে যন্ত্রটির মাধ্যমে প্রত্যেককে পরীক্ষা করা হয় সেটিই মেটাল ডিটেক্টর। তবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের মেটাল ডিটেক্টরই সাধারণ মানের হলেও এটির নিচ দিয়ে হেঁটে গেলে পয়সা, চাবির রিং বা মোবাইল ফোন থাকলেও বেজে ওঠে না। তবে কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র, যেমন-পিস্তল, রিভলবার, গ্রেনেড ও বড় ছুরি সহজেই শনাক্ত করতে পারবে। একটি মেটাল ডিটেক্টর সর্বনিু ২,০০০-৩,৫০০ টাকায় পাওয়া যায়। এই প্রযুক্তির আরেকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল, অস্ত্র বহনকারীর ২টি ছবিও তুলে রাখে। এ ধরনের একটি পরিপূর্ণ ভালো মানের কিনতে খরচ করতে হবে ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত।
সিসিটিভি সিস্টেম
ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরার সংক্ষিপ্ত রূপ হল সিসিটিভি ক্যামেরা। এটি এমন এক ধরনের নিরাপত্তা ক্যামেরা, যেটি বাসা বা অফিসের নির্দিষ্ট লোকেশনে সেট করা থাকে এবং এ থেকে ধারণ করা ভিডিও একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে এক বা একাধিক টেলিভিশন মনিটরে প্রদর্শিত হয়। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা আছে এমন সব স্থানে যেমন- ব্যাংক এবং শপিংমলে এ ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। যেখানে এ ধরনের ক্যামেরা লাগানো হবে সেই এলাকাকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে সাধারণত ৪টি, ৮টি অথবা ১৬টি ক্যামেরা লাগানো হয়। এরপর ‘সেফ জোনে’ একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং ব্যবস্থা থাকে, যেখানে টেলিভিশন মনিটরের মাধ্যমে একজন মানুষ পুরো এলাকার ওপর নজর রাখতে পারে। ব্যবহারের ভিন্নতার কারণে সিসিটিভি ক্যামেরা বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন- সাধারণ ক্যামেরা, ডোম ক্যামেরা, হিডেন ক্যামেরা, স্পাই ক্যামেরা, স্পিড ডোম পিটিজেড ক্যামেরা, ডে-নাইট ক্যামেরা, জুম ক্যামেরা, ভেন্ডাল প্র“ফ ক্যামেরা এবং আই পি ক্যামেরা। ইনডোর সিসিটিভিগুলোর জন্য খরচ পড়ে ৩,০০০-১৫,০০০ টাকা। আউটডোর সিসিটিভি লাগাতে খরচ করতে হবে ৪৫,০০০ -৫০,০০০ টাকা।
ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার)
কোনো বড় অফিস বা মিল-কারখানার নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হয় ৮ বা ১৬ চ্যানেলের স্ট্যান্ড অ্যালোন এমবেডেড ডিভিআর (ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডার) এবং বিল্ট-ইন ডিভিডি রাইটার। ক্যামেরার ছবি একই পর্দায় একসঙ্গে দেখা যায় এবং আলাদা আলাদা ভাবে হার্ডডিস্কে রেকর্ড হয়। এছাড়াও হাই স্পিড ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে লগ ইন করে লাইভ সিসিটিভি মনিটরিং বা রেকর্ডিং করা যায়। ডিভিআর লাগাতে চাইলে খরচ করত হবে ৩৫,০০০- ৯৫,০০০ টাকা।
কিপ্যাড ডোর লক
বাড়ি, অফিস বা অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তার জন্য স্বয়ংক্রীয় কিপ্যাড ডোর লক সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। দরজার মধ্যে এই যন্ত্রটি লাগাতে হয়। পাসওয়ার্ড বা কোড নম্বর দিলে স্বয়ংক্রীয়ভাবে দরজার লক খুলে যায়। ইন্টারকম সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত করে অ্যাপার্টমেন্টের যে কোনো ফ্লাট থেকে ইন্টারকমের একটি বাটন চেপে দরজার লক খুলে দেয়া যায়। স্বয়ংক্রীয় কিপ্যাড ডোর লক সিস্টেমের জন্য খরচ করতে হবে ৫,০০০-১ লাখ টাকা পর্যন্ত।
স্বয়ংক্রীয় অ্যালার্ম সিস্টেম
এই যন্ত্রটির ৮-১০ মিটারের মধ্যে কেউ এলেই স্বয়ংক্রীয়ভাবে সংকেত দেবে। একটি সংকেত বা অ্যালার্মের সঙ্গে অনেকগুলো ফটোসেল ব্যবহার করা যায়। অ্যালার্মের সময় নিজেদের পছন্দ মতো সেট করা যায়। একবার অ্যালার্ম বাজার পর ওই এলাকায় কোনো লোক থাকলে আবারও স্বয়ংক্রীয়ভাবে সংকেত দেবে। প্রয়োজনে রিমোট কন্ট্রোল সুইচ ব্যবহার করা যায়। রিমোট কন্ট্রোল সুইচের মাধ্যমে এই সিস্টেমকে চালু বা বন্ধ করা যায়। স্বয়ংক্রীয় এলার্ম সিস্টেম স্থাপন করতে চাইল গুনতে হবে ৭,০০০-১৫,০০০ টাকা।
অ্যাকসেস কন্ট্রোল
সাধারণত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিরাপত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কখন অফিসে যাচ্ছে বা কখন বের হচ্ছে সেটি জানার জন্যই মূলত অ্যাকসেস কন্ট্রোল এবং টাইম অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। ডিজিটাল কার্ড, পাসওয়ার্ড অথবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে ‘আন-অথরাইজড’ প্রবেশও বন্ধ করা যায়। একেকটি কার্ডে একেক কোড থাকে। কর্মীরা যখন এ কার্ড ‘পাঞ্চ’ করে তখন স্বয়ংক্রীয়ভাবে এ প্রযুক্তি কর্মীর প্রবেশ সময় রেকর্ড করে রাখে। ওই কর্মী যখন আবার অফিস থেকে বের হবেন তখনও তাকে দরজায় কার্ড স্পর্শ করেই দরজা খুলতে হয়। তখন কর্মীর অফিস ত্যাগের সময়ও প্রযুক্তিটি নিজ থেকে রেকর্ড করে রাখে। অফিসের কর্মচারীদের আসা-যাওয়া মনিটর করার প্রযুক্তি অফিস অ্যাটেনডেন্স ব্যবহারের জন্য খরচ পড়ে ৯০,০০০-২ লাখ টাকা পর্যন্ত।
ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম
এ প্রযুক্তিটি আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকলে সতর্কসংকেত প্রদান করে থাকে। অপটিক্যাল স্মোক ডিটেক্টর বা হিট ডিটেক্টর ডিভাইসটি আগুন লাগার আশংকা আছে এমন এলাকায় রাখতে হয়। সেটা দেয়াল অথবা সিলিং হতে পারে। ডিভাইসটি ধোঁয়ার উপস্থিতি বুঝতে পারে এবং এর পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে সতর্কসংকেত বাজিয়ে দেয়। বাজারে রয়েছে ইলেকট্রিক সাউন্ডার ডিভাইসও। আগুনের সংকেত ডিটেক্টর থেকে পাওয়া গেলে এই অ্যালার্ম সিস্টেমটি নির্দিষ্ট এলাকায় সাইরেন অথবা প্রচণ্ড শব্দ করে জানিয়ে দেয় যে আগুন ধরেছে। এ ধরনের প্রযুক্তি স্থাপন করতে চাইলে খরচ করতে হবে ১০,০০০- দেড় লাখ টাকা।
কোথায় পাবেন
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান এই নিরাপত্তা সুবিধা প্রদান করে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকেই এই সুবিধা নেয়া উচিত যাতে করে পরবর্তী প্রয়োজনে তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। উল্লেখ্য, অপটিমেশন বিডি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্য অন্যতম। অপটিমেশন বিডি'র আছে নিরাপত্তা যন্ত্রাংশের নিজস্ব সুবিশাল সংগ্রহ। ঢাকা সহ বাংলাদেশের সর্বত্র তারা সেবা প্রদান করে থাকেন। আপনার প্রয়োজনে আজই যোগাযোগ করতে পারেন
মোবাইলঃ 01614-000401,01797-992826
ওয়েব: www.optimationbd.com
No comments:
Post a Comment